চুপ কেন, তনু হত্যার বিচার পেয়ে গেছেন বলে?

প্রকাশঃ এপ্রিল ১৬, ২০১৬ সময়ঃ ১:২৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ

শারমিন আকতার

Tonu-power

তনুর জন্য এত্ত এত্ত ভালবাসা-চিৎকার-চেচামেচি-মিছিল-মিটিং সব শেষ!!! বিচার পেয়ে গেছেন? জেনে গেছেন কে বা কারা খুনি??? এই হল আপনাদের হুজুগে ভালবাসা!!! লোক দেখানো সহানভুতিও দেখলাম, ভালো মানুষ সাজার ভাবও অনেক দেখলাম!! আসলে সময় সব সত্যকে উন্মোচন করে দেয়। আজ যেমন আপনাদের মতো ভালোমানুষী মুখোশগুলোও দেখছি। ভেবেছিলেন, একটু ভাব-ভালবাসা দেখালে সবাই বলবে কত ভালো ছেলে, কত প্রতিবাদী ছেলে, নারীর কষ্টে সেও কষ্ট পায়!!! সব বুঝে গেছি!!! মৌসুমী ভালবাসা দেখান??? প্রেমিকার জন্য যে অন্ধ ভালবাসা, তার থেকে এক ফোঁটাও যদি দিতেন, তাহলে তনু কেন, কোনো মেয়েকে আর নির্বিচারে নির্যাতনের যাঁতাকলে পড়তে হতো না!!! হায়রে ভন্ডামী!!! অসহ্য লাগে নোংরা-পচা নর্দমার মনুষ্যরূপী কীটপতঙ্গদের দেখলে!!! ছিছিছি!!!

আপনাদের লোক দেখানো পর্ব শেষ। এবার শুরু হবে আমাদের লাড়াই। বলছি নারীর লাড়াইয়ের কথা। কোথাই গেলেন শাহবাগের প্রতিবাদী ভাইয়েরা? ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত রাত জাগা অতন্দ্র প্রহরীরা? কোথায় গেল আপনাদের অসীম ধৈর্য? আপনারা না বলেছিলেন, খুনি চিহ্নিত না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন। পেট্রল ফুরিয়ে গেছে? সব যোগান শেষ! আর মুখের বড় বড় কথা, সেগুলো উড়ে গেছে? লাকি আপা, আপনি কোথায় হারালেন? আপনার প্রতিবাদী বলিষ্ঠ কন্ঠ কোথায় গেল? আপনিতো মেয়ে, তনুর কষ্টতো আপনার বুকের ভেতর ক্যাকটাসের কাঁটা হয়ে খোঁচানোর কথা ছিল! কই চুপ করে গেলেন যে!

file (7)
             রাতের আঁধারে মশাল জ্বলেছে, দিনের আলোতে মন জ্বলেনি! এখন মশালের আলোও নেই , জোরালো স্লোগানও নেই!

ইমরান ভাইরা নাহয় ছেলে, দুচারটা সমাবেশ আর মিছিল-মিটিং দিয়ে সমাপ্তি ঘটালো। চারদিকের জনস্রোত দেখে গলায় চিৎকার করার জোর পেল। তাহলে আপনারও কি ভীড়ের মধ্যে গলায় জোর আসে, আর মনেও? তাই যদি হয়ে থাকে, তাহলে ধিক আপনাকে, ধিক সেই সময়পোযোগী নারী সহানুভূতিকারীদের! তনুর হত্যাকারীরাও ভালো করেই জানতো, এসব হুজুগে প্রতিবাদকারীর কথা। একটু ধৈর্য ধরলেই সব চুপ!!! পৃথিবীর বিচারে ওরাই জয়ী হয়ে গেল কিন্তু আল্লাহর বিচার থেকে কি ওরা পার পাবে? কখনই না। এই দুনিয়ায় বিচার নাই বলেই তো অপরাধীরা আরও বড় অপরাধী হতে ভয়-বাধা কোনো কিছুই পায় না। এখানে সাগর-রুনীর মতো সাংবাদিকের যেমন বিচার নেই; তেমনি তনুর মতো সাধারণ মেয়েও কোনো বিচার পায় না। আসল কষ্টতো তনু পেয়েছে। ওর ব্যথা যদি সত্যিই কেউ বুঝে থাকে, তিনি হল তনুর মা। এরপর ওর আপনজনরা। আমরাতো কোনছাড়।

এরকম সময়ের সুযোগ নিয়ে যারা নেতা-নেত্রী হতে চান; তাদের বলছি, আমাদের এত বোকা ভাববেন না। আমরা মাতালও নই, গাঁজাখোরও নই; আফিম খাওয়া অবান্তর স্বপ্নাতুর আকাশ-পাতাল ভাবা পাগলও নই।

তাই সাবধান, আমাদের মোকাবেলা করা এত সহজ হবে না। জানেনতো, নারীশক্তি ভয়ঙ্কর!!! একবার জেগে উঠলে বিচারের রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ছাড়বে না কাউকে। তা সে নারী নেত্রীই  হোক বা পুরুষ নেতাই হোক।

তনুর বিচারের ভার কোনো নেতা-নেত্রীর রাজনীতির ফাঁদে ফেলতে চাই না, এমন হাজারো তনুর নির্যাতনের     প্রতিবাদের  ভার আমাদের কাঁধে তুলে নিলাম। দেখি রাজনীতির মারপ্যাচ না জানা মানুষগুলো কতদূর এগুতে পারি। আমাদের প্রতিবাদ চলবে প্রতিক্ষণ।

==========

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G